মো: জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান
আগে যদি প্রশ্ন করা হতো মাদ্রাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? উত্তর আসত, দ্বীনি বিশেষ গভীর জ্ঞান অর্জন করা তথা আলেম তৈরি করা। যদি প্রশ্নটা বর্তমানে করা হয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্য কি? তখন উত্তরটা হবে আরো বিস্তৃত। দ্বীনী বিষয় গভীর জ্ঞান অর্জন করার পাশাপাশি ইসলামী নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন নাগরিক তৈরি করা। অথচ মানুষের ধারণা ভিন্ন। মানুষ মনে করে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পদচারণা শুধু কেবলই মসজিদ মাদ্রাসা সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রবাদে আছে, মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। বর্তমানে আলিয়া মাদ্রাসার বদৌলতে এ ধারণা বদলাতে শুরু করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রকৌশলী, সরকারি আমলা প্রভৃতির মতো দুর্নীতিগ্রস্ত পদগুলোতে নৈতিকতার প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। যা এই কালিমাখাচ্ছন্ন সমাজের জন্য আশার আলো। একজন মাদ্রাসার ছাত্র হিসেবে প্রত্যেকের সাধারণ লক্ষ্য বর্তমান সময়োপযোগী, বিজ্ঞানমনস্ক আলেম হওয়ার। বর্তমান সমাজে প্রচুর আলমের ছড়াছড়ি থাকলেও আলেমদের বিজ্ঞান বিমুখতার কারণে তারা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। ইন্টারনেট টেলিভিশন রেডিও প্রভৃতি আধুনিক প্রচার মাধ্যম ব্যবহার না করায় ইসলামের দাওয়াত শিক্ষিত মানুষের নাগালের বাইরে। তাই বর্তমান মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় দ্বীনি জ্ঞানের পাশাপাশি বাস্তবিক শিক্ষা দেওয়ার কারণে এখান থেকেই বিশ্বখ্যাত আলেম তৈরি হওয়া সম্ভব হচ্ছে।
পেশা নির্বাচনের দিক থেকে চিকিৎসকের নাম উপরে উঠে আসে। জনকল্যাণের পাশাপাশি প্রচুর অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকায় চিকিৎসক হওয়া আজ লাখো তরুণের স্বপ্ন। কিন্তু ডাক্তারদের নৈতিক অধঃপতনের কারণে বর্তমানে এই পেশার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ । কখনো কখনো এই মহান পেশাকে কসাইয়ের সাথে তুলনা করা হয়। এই পেশার হারানো সুনাম ফিরিয়ে আনতে মাদ্রাসা শিক্ষা অবদান রাখতে পারে।মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে দাখিল আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন চিকিৎসক হয়ে জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে। বিজ্ঞান হলো মুসলিম জাতির হারানো সম্পদ। রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতিবিদ্যার মতো প্রভৃতি বিষয়ে মুসলমানের অবদান আজও স্মরণীয়।
আজ নিজেদের অবহেলায় মুসলিমরা বিজ্ঞান চর্চা থেকে বহুদূরে চলে গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিজ্ঞানের অগ্রগামীতার সুযোগে কিছু দুষ্কৃতিকারীরা স্রষ্টার অস্তিত্বকে পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বর্তমান মুসলিম উম্মাহ যোগ্য দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অভাব হাড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছে।এ সকল অপবাদের জবাব দিতে এবং মুসলমানদের হৃদ গৌরব ফিরিয়ে আনতে জাতি মাদ্রাসা শিক্ষার মুখ চেয়ে আছে।
বিশ্বে কোন ব্যক্তি কিংবা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নির্ভর করে সংবাদমাধ্যমের উপর।এক্ষেত্র প্রিন্ট কিংবা টিভি মিডিয়ায় খুব একটা পার্থক্য হয় না।বর্তমানে ইসলাম ধর্ম ইহুদি নাসরাদের ষড়যন্ত্রের শিকার। বিবিসির মতে মিডিয়া অপপ্রচারের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের মানুষের কাছে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে উঠেছে যে, মুসলিমরা সন্ত্রাসী, তারা জিহাদের মত পবিত্র বিষয়কে অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদে পরিণত করেছে। এ ধরনের অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কে সংবাদিকতা পেশায় এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানীয়। এদেশে চুর বাটপারের অভাব নেই। রাষ্ট্রের চৌকিদার পদ থেকে শুরু করে সরকারী উচ্চতর কর্মী পর্যন্ত ঘুষ ও দুর্নীতিতে যুক্ত। এর পেছনে প্রধান কারণ নৈতিক ধর্মীয় অবক্ষয়।
তাই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের এ সকল পদে করলে সুজলা-সুফলা বাংলাদেশ তৈরিতে জাতি অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে।এভাবে চিকিৎসা, শিক্ষা, সরকারি চাকরি, বিজ্ঞান, সাংবাদিকতা, আইনজীবী, ব্যাংকারসহ সকল খাতে মাদ্রাসার নৈতিক ও দ্বীনি শিক্ষাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে অগ্রগতির পথে। মুসলিম জাতি ফিরে পাবে তাদের হারানো জ্ঞান ও সম্মান। যোগ্যতা সম্পন্ন ও নৈতিক দায়িত্ববোধ সম্পন্ন নাগরিক তৈরিতে মাদ্রাসা সাধ্য মত অবদান রেখে যাচ্ছে এবং এই অবদান অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু মাদ্রাসা গুলো বহুবিধ ষড়যন্ত্রের শিকার। আর্থিক সংকট, অপপ্রচার,সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার কারণে অনেক মাদ্রাসা ইতিমধ্যে স্কুল কলেজে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর। তাই জাতি কে এই অাসন্ন বিপদ থেকে রক্ষা করতে জাতির রক্ষাকর্তাদের এগিয়ে আসতে হবে।
Wow, marvelous blog format! How long have you ever been blogging for?
you made blogging look easy. The overall glance of your web site is excellent, let alone the content material!
You can see similar: najlepszy sklep and here dobry sklep