মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, দুমকি (পটুয়াখালী) সংবাদদাতাঃ
পটুয়াখালীর দুমকিতে ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মসজিদের ইমাম ক্বারি মোঃ আবু ইউসুফ (৪২) এর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে অভিভাবকগণ। তিনি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- মোঃ ফিরোজ হাওলাদার(২৩) পিতা- মোঃ হেলাল হাওলাদার, মোঃ নুর আলম(২৬), পিতা- মৃত. হাবিবুর রহমান হাওলাদার, মোঃ রনি (২৪), পিতা- মোঃ মনির মৃধা।
সোমবার(০৯ জানুয়ারি) দিবাগত সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় উপজেলার উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের কদমতলা খেয়াঘাট এলাকার মৃধা বাড়ি জামে মসজিদের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও ওই মসজিদে সকালে পড়তে যাওয়া কতিপয় শিশুদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের দক্ষিন হরিদেবপুর গ্রামের মৃত. দেলোয়ার গাজীর ছেলে ক্বারি মোঃ আবু ইউসুফ তার ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে উক্ত মসজিদের একটি রুমে থাকেন এবং ইমামতিসহ সকালে স্থানীয় বাচ্চাদের আমপাড়া পড়ান। ঘটনার দিন সকালে পড়া শেষে একজন একজন করে তার রুমে ডেকে নিয়ে ছবক আদায় করেন। সে মোতাবেক মোঃ রনি এর মেয়ে মোসাঃ লামিয়া(১১) কে আলাদাভাবে রুমে ডেকে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলে শ্লীলতাহানি করেন। পরে লামিয়া বাড়িতে এসে পরিবারকে সবকিছু বলে দেয়। লামিয়ার বাবা-মা উক্ত মসজিদের মুসুল্লি মোঃ জাকির মৃধাকে বিষয়টি অবহিত করেন। জাকির মৃধা বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিলেও ধৈর্য না ধরে লামিয়ার বাবা-মা ওইদিনই সন্ধ্যায় মসজিদের ইমামকে জিজ্ঞেস করতে গেলে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও জুতা পেটা করেন। এক পর্যায়ে ইমাম উপায় আপায় না পেয়ে পাশেই মৃধা বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
তদন্তকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ছেলে শিশু অভিযোগ করে বলেন, গত দুই-তিন আগে সকালে ভাত খাওয়ানোর কথা বলে হুজুরে আমাকে জোর করে রেখে আদর করার নামে উপুর করে মাথার ওপর কম্বল দিয়ে খারাপ কাজ করেছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ওই কিশোরীর অশীতিপর বৃদ্ধা দাদী সাবলীলভাবে বলেন, রুম আটকিয়ে ওই হুজুর কুপ্রভাব দিলে আমার নাতনী বলে- “তাহলে মাকে বলে দিব”। এতে সে গলাটিপে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয়। শেষে বিদ্যা নিয়ে কসম করতে বলে কিন্তু ও কসম করে নাই।
লামিয়াকে রুমের ভেতরে ঢুকিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে ক্বারি মোঃ আবু ইউসুফ বলেন, না। দরজা খোলা ছিল। কালকে রেজাল্ট দেয়া হয়েছে। ভিতরে আমার ছেলে আমপারা পড়তে ছিল। আমি সামনে দাড়িয়ে ছিলাম।
এর আগে ক্বারি মোঃ আবু ইউসুফ উপজেলার চরবয়ড়া গ্রামের নূরে আল হেরা মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। উক্ত মাদ্রাসার প্রধান মুফতি আঃ রহমান বলেন, আমার এখানে তার চাকরির বয়স মাত্র দুই মাস। তার কথার সাথে কাজের মিল নাই এবং অবস্থা বেশি ভালো না দেখে আমি নিজেই তাকে বাদ দিয়ে দিছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবদুস সালাম বলেন, উক্ত ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং-০৩। আসামিদের আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply