নওগাঁর মহাদেবপুরে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে দাঁত তুলতে গিয়ে হাসিবুল ইসলাম (৪) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে পাশর্^বর্তী পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের চান্দইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের সানোয়ার হোসেনের ছেলে। এই ঘটনার নায়ক কথিত হাতুড়ে ডাক্তার শ্রী প্রদীপ কুমার মন্ডলের (৪৬) বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় মামলা হয়েছে। তিনি মহাদেবপুর উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের চকচকি গ্রামের মৃত রঘুনাথ মন্ডলের ছেলে।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, শিশু হাসিবুলের দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় তার মা ও নানা তাকে মহাদেবপুর উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের গাহলী বাজারে কথিত দাঁতের ডাক্তার শ্রী প্রদীপ কুমার মন্ডলের আশা ডেন্টাল কিওর হোমে নিয়ে যান। সেখানে প্রদীপ ওই শিশুর দাঁতে ও দুই হাতে কয়েকটি অবশ করার ইনজেকশন পুশ করে দাঁত তুলে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশু হাসিবুল অজ্ঞান হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তার পুরো শরীর নীলবর্ণ ধারণ করে। এ সময় ডাক্তার প্রদীপ শিশুটিকে অক্সিজেন দেয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পরামর্শ দেন।
অভিভাবকেরা তাকেও সঙ্গে যেতে বললে তিনি অন্য রোগী দেখা শেষ করে যাবেন বলে জানান।
দুপুরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে শিশুটির আত্মীয়স্বজন উপজেলা কমপ্লেক্সে ভীড় জমান। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজনও সেখানে ছুটে যান। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
খবর পেয়ে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা: আবু হেনা মো: রায়হানুজ্জামান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও অনাকাঙ্খিত। এসব কথিত হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
হাতুড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক জানান, কথিত ডাক্তার প্রদীপ নিজেকে একজন দাঁতের ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গাহলী বাজারে রোগী দেখে আসছে। তার কি কি ডিগ্রী রয়েছে তা কেউ জানেন না।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ মর্গে পাঠায়। সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে নিহত শিশুর পিতা বাদি হয়ে কথিত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অবহেলা জনিত কারণে নিহত হবার দায়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত কথিত ডাক্তার পলাতক রয়েছে বলেও তিনি জানান।
Leave a Reply