চৌদ্দো বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন ৩৫ বছর বয়সী রমজানের জীবন। নিজ ঘরের পিছনে একটি টিনের খোলা ছাপড়ার নিচে তাকে কোমরে শিকল আর তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। তার শরীরের থাকে না কোন কাপড়-চোপড়। বস্ত্রহীন থাকতে পছন্দ করেন তিনি। সেখানে চলছে তার খাওয়া-দাওয়া আর প্রসাব-পায়খানা।
জন্মের প্রায় ২০ বছর পর অস্বাভাবিক আচরণ করে কিশোর রমজান মিয়া।হারিয়ে ফেলে মানসিক ভারসাম্য। প্রায় ১৪ বছর ধরে শিকল বন্দি জীবন জাপন করছে রমজান মিয়া। বাবার সমর্থন অনুযায়ী চিকিৎসা পর সুস্থ্য হয় রমজান। পরে আবার ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। বেপরোয়া হয়ে অকারণে পরিবারসহ প্রতিবেশিদের সাথে অত্যাচার শুরু করে। তার এমন আচরনণে হাত–পা শিকলবন্ধি করে বাড়িতে ফেলে রাখে তার বাবা। ফলে ১৪ বছর থেকে বাড়িতে খুটির সাথে শিকলবন্দি জীবন কাটছে রমজান মিয়া।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার খলসী ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের মোঃ আজাহার মিয়ার বড় ছেলে রমজান মিয়া। দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে রমজান মিয়া। ৫ পঞ্চম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ালেখাও করে সে। দরিদ্রতার কারণে পড়ালেখা ছেড়ে কিশোর বয়সেই প্রেসে কাজ শুরু করে রমজান মিয়া। এসময়েই ঘটে তার মানষিক বিবৃতি। দীর্ঘদিন থেকে নানা চিকিৎসা পরও সুস্থ্য না হওয়ায় তাকে নিয়ে বিপাকে পড়ে পরিবার। চিকিৎসার খরচ জোগাতে ও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তাই ১৪ বছর ধরে শিকল বন্দি করে বাড়ির সামনে ছোট ছাপড়া ঘরে রাখা হয়েছে রমজান মিয়া কে।
রমজান মিয়ার বয়স এখন ৩৫। শিকলবন্দি ছেলেকে নিয়ে নিজেদের নানা কষ্ট ও দুর্ভাগের কথা জানালেন তার বাবা আজাহার মিয়া।সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার দাবি জানান রমজানের বাবা আজাহার মিয়া।
খলসী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউর রহমান সাথে কথা বললে তিনি বলেন রমজান খুব ভদ্র নম্র একটি ছেলে ছিলে সরকারের কাছে দাবী জানাই তাকে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানাই।
এদিকে, রমজানের অবস্থা জানার পর সহযোগিতা আশ্বাস দিলেন মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ জেলাপ্রশাসক মানিকগঞ্জ। সবার সহযোগিতা আর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রমজান স্বাভাবিক জীবন এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
Leave a Reply