হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সমালোচনা বতর্মানে দেশের সাধারণ জনগণের প্রধান আলোচ্য বিষয়। জনগণ মনে করছে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে জনগণের প্রতি সরকারের ‘নির্দয়’ আচরণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
মহামারীর পর ইউক্রেইন যুদ্ধের মধ্যে যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন সঙ্কটে, তখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার।
বাস-ট্রাকের জ্বালানি ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা হয়েছে। ছোট গাড়ি ও মোটর সাইকেলের জ্বালানি পেট্রোল ও অকটেনের দাম যথাক্রমে বেড়েছে ৪৪ ও ৪৬ টাকা।
জ্বালানির দাম বাড়ার ফলে পরিবহন ভাড়া যেমন বেড়েছে, তেমনি নিত্যপণ্যের দামও আরেক দফা বাড়তে শুরু করেছে।
“জ্বালানি তেলের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ৫১ শতাংশেরও বেশি পর্যন্ত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নির্দয় ও নজীরবিহীন। প্রমাণ হল, দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই।”
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব অন্য ক্ষেত্রে পড়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকটাই নাগালের বাহিরে চলে গেছে।
“বেড়ে গেছে পরিবহন ব্যয়।আট মাস আগে ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর চাপ সামলে ওঠার মধ্যেই আবারও গণপরিবহনে একটা বাড়তি ভাড়ার ধাক্কার মুখে পড়তে হচ্ছে সবাইকে।
ইতিমধ্যে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে গেছে, বাড়বে দামও। এতে রপ্তানি শিল্পেও বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। অনেকে শংঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ভয়াবহ পরিণতির দিকে অগ্রসর হবে দেশের অর্থনীতি।”
ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বছরের শুরুতে বিশ্বের জ্বালানি বাজার অস্থির হলেও এখন যখন দাম কমছে, তখন মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন।
“বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম এখন নিম্নমুখী। গত ৪-৫ মাসে বিভিন্ন স্থানে বেঞ্চমার্ক ক্রুড ওয়েলের দাম কমেছে ২৯ থেকে ৩০ শতাংশ। ইউএস বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮৯ ডলারের নিচে নেমে যায়। গত মার্চে যার দর উঠেছিল ১২৪ ডলারে।
“আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড প্রতি ব্যারেল বিক্রি হয় ৯৪ ডলারে। সারাবিশ্বে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমতে শুরু করেছে, তখন দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধি সকল মহলকে হতাশ করেছে।”
দেশের সব মহলের সরকারের প্রতি প্রত্যাশা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ‘গণবিরোধী’এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা।
Leave a Reply