মোঃ মিন্টু শেখ স্টাফ রিপোর্টার : কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ কাশিয়ানী সমবায় কর্মকর্তা মো. মোরাদ আলী, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা সমবায় কর্মকতা মো. মোরাদ আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া বিল-ভাউচারে কম্পিউটার কেনা ও প্রশিক্ষণের অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ বিতরণে উৎকোচ নেওয়া, সমবায় দিবস পালনের নামে চাঁদা আদায়, সমিতি নিবন্ধনের নামে মোটা অংকের টাকা দাবি, সমিতির অডিট (হিসাব নিরীক্ষা) নামে ভয় দেখানো, পোস্টিং নীতিমালা উপেক্ষা করে নিজ উপজেলায় চাকরি, এলাকার প্রভাব ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোরাদ আলী সমবায় কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে নিজ উপজেলা কাশিয়ানীতে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর যোগদান করেন। ‘সমবায় পোস্টিং নীতিমালা অনুযায়ী নিজ উপজেলায় চাকরি করার কোন বিধান নেই। মোরাদ আলী একই উপজেলার বড়পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম কালা মিয়া।
সমবায়ের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে জেলার মধ্যে এ উপজেলা শীর্ষে থাকলেও, বর্তমান কর্মকর্তার দুর্নীতিতে ভেস্তে গেছে সেই সুনাম।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে দিনব্যাপী সমবায় প্রশিক্ষণের জন্য সরকারিভাবে ১৫,০০০ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু সমবায় কর্মকর্তা ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে সে টাকা উত্তোলন করে আত্মাসাৎ করেন। পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের মুখে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ৮ আগস্টে তারিখবিহীন ব্যানার দিয়ে লোক দেখানো প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থ বছরে অফিসের কম্পিউটার কেনার জন্য ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে এক মাস আগে সে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন সমবায় কর্মকর্তা। একই অর্থ বছরে সমবায়ীদের জন্য চারটি প্রশিক্ষণের বরাদ্দ আসে। গত ৩০ আগস্ট উপজেলার পদ্মবিলা ১ ও ২নং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৪জন সদস্যের মাঝে ঋণ বিতরণের চেক হস্তান্তর করা হয়। একই ব্যানারের ওপর পুরানো প্রশিক্ষণ ব্যানার টাঙিয়ে চেক নিতে আসা সদস্যদের বসিয়ে ছবি তুলে প্রশিক্ষণ দেখানো হয়। পরবর্তীতে বিল-ভাউচার জমা দিয়ে প্রশিক্ষণের বরাদ্দের টাকা উত্তোলন নেন ওই কর্মকর্তা।
এছাড়া ঋণ পেতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ওই ৩৪ সদস্যকে গুনতে হয়েছে ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকা করে উৎকোচ। এসব টাকা পদ্মবিলা ১নং আশ্রয়ণ প্রকল্প বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নান্নু মুন্সী সংগ্রহ করে ওই কর্মকর্তাকে দিয়েছেন।
টাকা নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে নান্নু মুন্সী বলেন, স্ট্যাম্প, কাগজপত্র কেনা ও যাতায়াত খরচ বাবদ টাকা নেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বসিয়ে ৫/১০ মিনিট কথা বলেছিলেন। সিংগাড়া-কলা নাস্তা দিয়েছিল। তবে কোন টাকা-টাকা পয়সা দেয়নি।
আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা মালা খানম বলেন, আমার ও আমার বাবার নামে লোন করার জন্য প্রথমে ৫০০ টাকা জমা দেই। বাবা অসুস্থ থাকায় তার নামে লোন হয়নি। আমার নামে লোন করতে অফিসে পরবর্তীতে আরও ১২শ’ টাকা অফিসে খরচ দেওয়া লাগছে। তবে এর আগে কখন ঋণ করতে অফিসে টাকা দেওয়া লাগেনি।
একই অভিযোগ করে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলের অপারেশনের জন্য জরুরী টাকা লাগবে। তাই আমি ও আমার ছেলের নামে সমবায় অফিস থেকে দুইটি লোন করেছি। সমবায় অফিসে খরচ বাবদ ২৮০০ টাকা দিতে হয়েছে। এ সব অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মোরাদ আলীর মুঠোফোনে কল দিলে তিনি অশালীনভাষায় গালাগাল করে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নবীউল ইসলাম বলেন, আমি কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। যে কারণে কোন বক্তব্য দিতে পারছি না।
Leave a Reply