1. admin@dailysomoyaralo24.com : admin :
রাণীশংকৈলে ভুট্টার ডাঁটাই ঝুলছে ঝিঙে দৈনিক সময়ের আলো ২৪
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সময়ের আলো টোয়েন্টিফোর ডটকম পত্রিকায় আপনাকে স্বাগতম। সাংবাদিক  গোলাম কিবরিয়ার সম্পাদনায় আমরা সত্যসন্ধানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, অপরাধ - অনিয়ম-ঘুষ সন্ত্রাস চাঁদাবাজ ও ভূমি দস্যূের সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদেরকে জানান আমরা তা তুলে ধরবো জনতার স্বার্থে  ধন্যবাদ।  ভিজিট করুন www.dailysomoyaralo24.com
শিরোনাম :
ঠাকুরগাঁও ইএসডিওর গেইমচেঞ্জার প্রকল্পের অবহিত করণ সভা অনুষ্ঠিত লাউ চাষে সফল উদ্যোক্তা তৌহিদ কাহারোলে ভ্রাম্যমান আদালতে সার ডিলারকে জরিমানা ঠাকুরগাঁও যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে ইউএনও’র অব্যবস্থাপনায় বিজয় দিবস অনুষ্ঠান বয়কট সাংবাদিকদের সিরাজগঞ্জের সলংগায় বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কাহারোলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পদে যোগদান করছেন মো: শফিকুল ইসলাম শফিক গাজীপুর শিল্প নগরী টঙ্গীতে ঐতিহ্যবাহী অলিম্পিয়া টেক্সটাইল মিলের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা

রাণীশংকৈলে ভুট্টার ডাঁটাই ঝুলছে ঝিঙে

আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২

গাছ থেকে ভুট্টা তোলা শেষে জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা ডাঁটায় সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে হলদে ফুল। সবুজ পাতা আর হলদে ফুলের মাঝে জড়িয়ে আছে ঝিঙে আর ঝিঙে। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের বিরাশি গ্রামের ৬০ হেক্টর জমির চিত্র এখন এটি।

বাণিজ্যিকভাবে ঝিঙে আবাদে লতাপাতা যাতে মাটিতে গড়াগড়ি না খায় সেজন্য এতদিন বাঁশের কন্চি বা বাঁশের তৈরী খুটি ব্যবহার করা হতো। এতে ঝিঙে আবাদের খরচ বেড়ে যেত । খরচ কমিয়ে আনতে এবার খুটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভুট্টার ডাঁটা।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই শতাধিক কৃষক ৬০ হেক্টর জমিতে অভিনব এ পদ্ধতি ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে ফেলেছেন।
সেই জমি থেকে সপ্তাহে অন্তত ৪৫০ থেকে ৫০০ মণ ঝিঙে পাওয়া যাচ্ছে। স্বল্প খরচে এক জমিতেই দুই ফসলের আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা।

সরেজমিনে গেলে লেহেম্বা ইউনিয়নের বিরাশি গ্রামের কয়েকজন ঝিঙে চাষী জানান, ভুট্টার ক্ষেতে এক দেড় মাসের মধ্যে ভুট্টা গাছের পাশে ঝিঙের বীজ রোপন করা হয়। ভূটার সেচ আর পরিচর্যায় ভূট্রার পাশাপাশি ঝিঙের গাছও বড় হতে থাকে। ভুট্টার মোচা গাছ থেকে ভেঙ্গে নেওয়ার পর গাছ পরিত্যক্ত অবস্থায় থেকে যায় জমিতে। পরে ভুট্রা ডাঁটা ঝিঙের খুটি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এতে অতিরিক্ত সার বা সেচ কোনটাই লাগেনা। শুধু মাত্র পোকামাকড় দমনে স্প্রে করা হয় কীটনাশক।

কৃষকরা আরো জানান, গত চার বছর ধরে ভুট্টার সাথি ফসল হিসেবে ঝিঙে আবাদ করার ফলে এক খরচেই দুটি ফসল পাওয়া যাচ্ছে। ঝিঙে চাষের জন্য আলাদা কোনো খরচ লাগছে না। ফলে ওই পদ্ধতিতে ঝিঙে চাষ করে একদিকে যেমন পরিবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে বিক্রি করে বেশ আয়ও হচ্ছে।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ব্যাপক ভুট্টা চাষ হয়। খেত থেকে ভুট্টা তোলা শেষ হলে শুরু হয় আগাম আলু চাষের ব্যস্ততা। এ অল্প সময়টাতে অন্য কোনো ফসল চাষের সুযোগ নেই বলে চাষিরা জমি ফেলে রাখতেন। কিন্তু চাষিরা এখন সেই জমিতে ঝিঙে চাষ করে বাড়তি আয় করছেন।

জমিতে বীজ বপনের এক মাসের মধ্যে ভুট্টার গাছ বেড়ে ওঠে। সে সময় সাত থেকে আট ফুট দূরে দূরে ভুট্টা গাছের গোড়ায় ঝিঙের বীজ বপন করে দেন চাষি। বীজ অঙ্কুরোদগমের পর ভুট্টার ডাঁটা জড়িয়ে বেড়ে উঠতে থাকে ঝিঙে লতা। ভুট্টা তোলার উপযোগী হলে সেই গাছে ফুল আসতে শুরু করে। মোচা ভেঙে নেওয়ার পর খেতে ভুট্টার ডাঁটা থেকে যায়। আর সেই ডাঁটায় ঝিঙে লতা সেটাকে জড়িয়ে থাকে। কিছু দিনের মধ্যেই ঝিঙে লতা ফুল-ফলে ভরে ওঠে। তখন সেখান থেকে ঝিঙে তুলে বাজারে বিক্রি করেন চাষিরা।

আকবর আলী নামে একজন কৃষক জানান, আমরা কৃষি অফিসের এমন উন্নত প্রযুক্তি অবলম্বন করে ভুট্টা ও ঝিঙে এক সাথে আবাদ করার ফলে এক খরচেই দুটি আবাদ হয়ে পড়ছে। ঝিঙের জন্য আলাদা কোন খরচ বহন করতে হচ্ছে না।
জমি থেকে ফসল তোলা শেষ হলে জমিতে দাঁড়িয়ে থাকা ভুট্টা গাছের ডাঁটা খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে ঝিঙে চাষ করছেন তারা।
আর আগাম আলুর মাঝখানে বাড়তি ফসল পাওয়ায় আমরা বেশ খুশি।

আমাদের এলাকায় সবজির চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে আশ পাশের গ্রামসহ উপজেলা জেলা শহরের পাইকারদের কাছে ২৫ টাকা কেজি দরে ঝিঙে বিক্রি করছি। এতে একদিকে যেমন আমাদের সবজির চাহিদা মিটছে অন্যদিকে আমরাও এক জমি থেকে দুটি ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছি।

শুধু কৃষক আকবর আলী নন, ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রামের দুই শতাধিক কৃষক এখন ওই পদ্ধতিতে ঝিঙে চাষ শুরু করেছেন। এতে তাঁদের বাড়তি আয়ও হচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক আকতার হোসেন বলেন, ‘ভুট্টা চাষের পর আমরা আগাম আলু চাষি করি। এবার কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার ডাঁটায় ঝিঙে চাষ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার ঝিঙে বিক্রি করেছি। ভুট্টা তুলে নেওয়ার পরে এবং আলু রোপনের জমি প্রস্তুত করার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত জমি থেকে ঝিঙে তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়।

ওই গ্রামের কৃষক সামসুল আলম এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার সঙ্গে ঝিঙে আবাদ করেছেন। তিনি প্রায় ৬০ মণ ঝিঙে পেয়েছেন। আরো রয়েছে জমিতে। এযাবৎ বিক্রি করে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, বাংলাদেশের একমাত্র রাণীশংকৈল উপজেলায় ভুট্টার ডাঁটা ঝিঙের খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।
লেহেম্বা ব্লকের বিরাশিসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ৬০ হেক্টর জমিতে প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ মণ ঝিঙে তুলে বাজারজাত করছে চাষিরা।
আমরা কৃষকদের পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা