পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বাতিলের দাবিতে ও আগামীকাল বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটিতে ভূমি কমিশনের সভা বাতিলের দাবিতে ২ দিন হরতাল ঘোষনা করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ(পিসিএনপি)।
আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাঙ্গামাটি শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষনা করেন পিসিএনপির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, আগামীকাল মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত ভূমি কমিশনের বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটিতে হরতাল পালন করা হবে এবং জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।পার্বত্য চট্রগ্রামে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক নায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবিও বাস্তবায়নের আহবান করেন।এছাড়াও আজ সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পিসিএনপি কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রুহুল আমিন,মোহাম্মদ সোলায়মান, সহ সা. সম্পাদক এসএম মাসুম রানা,আবু বক্কর সিদ্দিক,সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডালিম,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন,সহ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আবছার,পিসিসিপি কেন্দ্রীয় সি.সহ-সভাপতি মো. হাবীব আজম,পিসিএমপি রাঙামাটি জেলা সেক্রেটারি আসমা মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলী আক্তার প্রমুখ, সহ সম্পাদীকা মোর্শেদা আক্তার সহ পিসিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ সমস্যা সমাধানে সরকার ইতিমধ্যে ভূমি কমিশন গঠণ করলেও ভূমি বিরোধের সমাধান হয়নি।বিদ্যমান ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১ অনুযায়ী, কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা ৯জন। এর মধ্যে ৭জন সদস্যের পদ উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত এবং অপর দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন হলেন কমিশনের চেয়ারম্যান পদে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও অপরজন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার বা তার মনোনীত একজন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার।
এ ক্ষেত্রে কমিশনের বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোতে মোট ৭জন সদস্যের মধ্যে বাঙ্গালীদের কোনো প্রতিনিধি নেই।বর্তমান বাস্তবতায় যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি বাঙ্গালী, সেখানে ভূমি কমিশনের সংগঠনণে বাঙ্গালীদের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় তাদের ভূমির অধিকার সংরক্ষিত হওয়া নিয়ে চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সংশোধনীতে ভূমি কমিশনের কার্য সীমার কলেবর বাড়িয়ে পুনর্বাসিত শরণার্থীদের (ভারতে গিয়ে পার্বত্য চুক্তির পর ফিরে আসা) ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের সঙ্গে অবৈধ বন্দোবস্ত ও বেদখল হওয়া ভূমি এবং জলেভাসা ভূমিসহ যে কোনো ভূমিকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এর ফলে, গত চার দশকে বাঙ্গালীদের কাছে বন্দোবস্ত দেওয়া জমির বৈধতা নিয়েও অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা সৃষ্টি হবে এমনকি বহু বাঙ্গালী ভূমিহীন হয়ে পড়বে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় ব্যবহৃত ভূমি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার আশংকা রয়েছে। (চলবে)
Leave a Reply