ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে যৌতুক চাওয়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনেপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বরসহ ৫ জন আহত হয়েছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন গনমমাধ্যম কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (১২ আগষ্ট) বিকেল ৫টায় উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের হিয়াবলদি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১২ জুলাই হিয়াবলদি গ্রামের (কুয়েত প্রবাসী) শামিল শেখের কলেজপড়ুয়া মেয়ে স্বর্ণা আক্তারের (১৯) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী লস্করদিয়া ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে (এনজিওকর্মী) শাহজাহান শেখের (৩৪) পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়েছিল।
পরে দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ের এক মাসের মাথায় শুক্রবার (১২ আগষ্ট) অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হয়।
এদিন দুপুরের পর বরযাত্রী আসলে শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া। এরপর বরপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী কনেপক্ষ ‘দেনা-পাওনা’ মেটাতে ব্যর্থ হলেই বাঁধে হট্টোগোল। এ নিয়ে দুই পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এক পর্যায়ে দু-পক্ষের সমঝোতায় ওই সময়ই বর-কনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
পরে কনের বাড়ি থেকে বরকে দেওয়া স্বর্ণের আংটি ফেরত চাওয়া হলে বরপক্ষ স্বর্ণের পরিবর্তে রূপার একটি আঙটি ফেরত দেয়। আর এ নিয়েই বাঁধে সংঘর্ষ। এসময় বরকে বেঁধড়ক পিটিয়ে আহত করে কনেপক্ষের লোকজন। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়।
খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং দুই পক্ষকেই ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে কনের মা শেলিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে ছেলেপক্ষ আমাদের কাছে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। আমরা দিতে দেরি করলে তারা আমাদের বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিল। এছাড়া আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। আমি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করি এবং সময় চাই। দুই পরিবারের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হয়। ইতোমধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের কেনাকাটা শেষ হয়েছে। অনুষ্ঠানে তাদের প্রায় ৫০ জন লোক বরযাত্রী হিসেবে আসে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তারা মেয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায় ও তাদের পাওনার জন্য চাপ দেয়। আমরা একটু সময় চাইতেই তারা খারাপ আচরণ শুরু করে। আর এ নিয়েই বাঁধে বাকবিতণ্ডা। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ বিষয়ে বর শাহজাহান (৩৪) শেখ বলেন, আমার স্ত্রী একজন খারাপ চরিত্রের নারী । তার অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। আমি বিষয়টি জেনে যাওয়ায় আমার সঙ্গে তার ঝগড়া বাঁধে। তারা বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আমার সব জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। তাছাড়া আমাকেসহ আমার সঙ্গের লোকদের পিটিয়েছে।
ফুলসুতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমাকে কেউ এখনো জানায়নি। তবে বিয়ে বাড়িতে এমন ঘটনা লজ্জাজনক।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুই পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয় । তবে এ ব্যাপারে এখনও কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply