স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এ কর্মসূচির মাধ্যমে একদফা আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন আদায় এবং সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে দলটি দেশব্যাপী বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা জেলা এবং গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পতন ছাড়া এবার বিএনপি মাঠ ছাড়ছে না। বিএনপির এই কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে একইভাবে রাজধানীর ১১ স্পট থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি বের করে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ৩৬টি রাজনৈতিক জোট ও দল।
একদফার যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচিতে মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে দয়াগঞ্জ রায় সাহেববাজার মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার এবং বুধবার আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটারের পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে। এদিকে বিরোধীপক্ষের উস্কানিতে যাতে কোনও প্রকার সহিংসতা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা না হয় সেদিকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নেতা-কর্মীদের। পাশাপাশি ব্যাপক লোকসমাগম ও কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ রাখতে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একই দিনে রাজধানীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি থাকায় সতর্কতা অবলম্বন করছে দলটি। এ ছাড়া পদযাত্রা কর্মসূচির শৃঙ্খলা ধরে রাখতে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ১২ জুলাই নয়াপল্টনে কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে বিএনপি অশান্তিতে নয়, শান্তিতে বিশ্বাস করে। একদফা দাবিও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হবে। কর্মসূচিতে দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। অভিন্ন দাবিতে একই কর্মসূচি ঘোষণা করে সমমনা দলগুলো। ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১০ দফা দাবিতে কর্মসূচি করে আসছিল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এরপর ১২ জুলাই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশাল সমাবেশ করে একদফার ভিত্তিতে দুদিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। তাদের সমর্থন দিয়ে একই দিনে অভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করে সমমনা দলগুলো।
বিএনপির ঘোষিত একদফার মধ্যে রয়েছে- বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও বর্তমান সংসদ বিলুপ্তি; নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে তার অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা; বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল এবং সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার। একদফার ভিত্তিতে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গাবতলী থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করে। এর পর টেকনিক্যাল মোড় হয়ে মিরপুর-১, মিরপুর-১০ গোল চত্বর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা (আগারগাঁও), বিজয় সরণি, কারওয়ানবাজার, এফডিসি সড়ক হয়ে মগবাজার এলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার নেতাকর্মীরা যুক্ত হবেন।
এর পর মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন (দলীয় কার্যালয়), ফকিরাপুল, মতিঝিল (শাপলা চত্বর), ইত্তেফাক মোড় হয়ে দয়াগঞ্জ রায়সাহেববাজার মোড়ে গিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হবে বিকাল ৪টায়। পদযাত্রা শুরুর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় গাবতলী এসএ খালেক বাসস্টেশনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হবে।
Leave a Reply