ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও, বাচোর ও নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন হবে ২৭ জুলাই। এখানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এভাবে ভোট দেওয়া নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিনটি ইউনিয়নে মোট ১৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সাধারণ সদস্য পদে ৮৭ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৫ প্রার্থী আছেন। এ তিন ইউনিয়নে মোট ভোটার ৬১ হাজার ১৪৮ জন।
নন্দুয়ার ইউনিয়নের সন্ধ্যারই গ্রামের নির্মাণ-মিস্ত্রি নিরব হাসান রাজু, বনগাঁও এলাকার কৃষক আমিন, গাজীরহাটের রাজু ইসলামসহ অনেকে বলেন, জীবনে প্রথমবার ইভিএমে ভোট দেবেন। এ নিয়ে তাঁদের বেশ কৌতূহল রয়েছে। তবে তাঁরা এ মেশিনের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কি না, সঠিকভাবে মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁদের।
একইভাবে হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামের দুলাল, কলিগাঁও এলাকার রুহুল আমিন ও হঠাৎ বস্তির ছাত্তার বলেন, এমন মফস্বল এলাকায় ইভিএম দিয়ে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। ভোটের কমপক্ষে এক মাস আগে থেকে ইভিএমের ব্যবহার সমন্ধে ধারণা দেওয়ার জন্য পাড়ামহল্লায় প্রচার চালানো উচিত ছিল। হঠাৎ একটি নতুন মেশিনের মাধ্যমে ভোট দেওয়াটা একটু ঝামেলার। তা ছাড়া কী করে কাকে ভোট দেবেন তা তো আর একদিনে বুঝবেন না।
বাঁচোর ইউনিয়নের আমজুয়ান এলাকার রুহুল কুদ্দুস ও মীরডাঙ্গীর উজ্জ্বল বলেন, তাঁরা শুনেছেন ইভিএমে এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় চলে যায়। যদি তাই সত্যি হয় তাহলে তো ভোট দেওয়া আর না দেওয়া সমান। পছন্দের প্রার্থীকে যদি ভোট দিতে না পারেন তাহলে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে হোসেনগাঁওয়ের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসির উদ্দীন (মোটরসাইকেল প্রতীক) বলেন, ‘সাধারণ ভোটাররা জীবনের প্রথম ইভিএমে ভোট দেবেন, তা নিয়ে একটু সংশয় রয়েছে।’
একই ইউনিয়নের আ.লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) এম জি রব্বানী বলেন, ‘ইভিএমে ভোট দেবেন ঘোড়ায়, ভোট যাবে নৌকায়, এমন প্রচার চলছে ইউনিয়নজুড়ে।’
নন্দুয়ারের চেয়ারম্যান প্রার্থী জমিরুল ইসলাম (মোটরসাইকেল প্রতীক) বলেন, ‘ভোট কী হবে তা বলতে পারছি না। এমনিতে ইভিএম, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁদের নির্বাচনী বিভিন্ন সভায় ভোটারদের নৌকা ছাড়া অন্য কোথাও ভোট দিতে নিষেধ করছেন।’
তবে তিন ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমান, আব্দুল বারি ও জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, ভোট অবশ্যই সুষ্ঠু হবে এবং ইভিএমে কোনোভাবেই কারচুপি করার সুযোগ নেই। আসলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিশ্চিত পরাজিত হবেন বলেই ইভিএম নিয়ে অপপ্রচার করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুর-ই আলম বলেন, ‘ইভিএমে ভোট অবশ্যই ভালো হবে। তা ছাড়া ভোট দেওয়ার পদ্ধতি সমন্ধে ধারণা দিতে ইউনিয়নগুলোতে ইভিএমের প্রদর্শনী চলছে।’
উপজেলার হোসেনগাঁও, বাঁচোর ও নন্দুয়ার ইউপিতে নির্বাচন হবে ২৭ জুলাই। এই তিন ইউনিয়নে মোট ভোটার আছেন ৬১ হাজার ১৪৮ জন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ গোলাম কিবরিয়া / ই-মেইল :daliysomoyaralo24info@gamil.com --(জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো প্রিন্ট পত্রিকার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই)
দৈনিক সময়ের আলো ২৪ডট কম