খাগড়াছড়ির -রামগড়ে ভুয়া সনদ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সহ উপজেলা কোর্ট মসজিদে ইমাম হিসেবে চাকরি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এভাবেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সে চাকরি করছে, অভিযুক্ত ওই ইমামের নাম মোঃ আবদুস সামাদ। সে রামগড় পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড চৌধুরী পাড়া এলাকার মৃত আব্দুল খালেক এর ছেলে। তার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট জাল করার।
অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানা ও বাগান বাজার ইউপি”র অধিনস্থ পুরান রামগড় ইসলামিয়া আজিজুল উলূম মাদ্রাসা থেকে মেশকাত (উলা) শ্রেণি পাশের ভুয়া সনদপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে রামগড় উপজেলা কোর্ট মসজিদে ৪/৫ বছর ধরে সহকারী ইমাম মোয়াজ্জেম পদে চাকরি করছে।।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোঃ আবদুস সামাদ,পুরান রামগড় ইসলামিয়া আজিজুল উলূম মাদ্রাসায় তার সার্টিফিকেট সন অনুযায়ী মাদ্রাসার ২০১৫ (১৪৩৭হিজর) সালের ছাত্র ভর্তি রেজিঃ দৈনিক হাজিরা খাতা এবং সার্টিফিকেট বিতরণের রেজিঃরে মেশকাত (উলা) বিভাগে তার কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে পুরান রামগড় ইসলামিয়া আজিজুল উলূম (কাজী বাড়ি) মাদ্রাসার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী ওয়ালি উল্লাহ সাক্ষরিত এক প্রত্যয়ন পত্র সুত্রে জানা গেছে মোঃআবদুস সামাদ,পিতা -আব্দুল খালেক;,মাতা-নাজরীন আক্তার, জন্ম তারিখ ১০,০৭,১৯৯২ সন,চৌধুরী পাড়া,রামগড় খাগড়াছড়ি,সে ২০১৫ সালের মেশকাত (উলা) বিভাগ ১৮,১২,২০১৭,সাল মূলে ইস্যুকৃত সনদটি পুরান রামগড় ইসলামিয়া আজিজুল উলূম মাদ্রাসা ক্রমিক নং 043 মাদ্রাসার তথ্য যাচাইবাছাইয়ে দেখা যায় যে ২০১৫ সালে এই নামে কোন ছাত্র ভর্তিও করা হয়নি,এবং মেশকাত( উলা)পরীক্ষায়ও অংশগ্রহন করেননি,ইহাতে প্রতিয়মান হয় যে উক্ত সনদটি সম্পূর্ণ ভুয়া,রামগড় উপজেলা কোর্ট জামে মসজিদের মুসল্লিদের তথ্য আবেদনের প্রেক্ষিতে এই প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করা হয়েছে ।প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লাহ আরো বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাইরে থেকে ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে অনেকে বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে,এতে প্রতিষ্ঠানের শুনাম নষ্ট হয়।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ আবদুস সামাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাল সার্টিফিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করেন।তিনি বলেন, জাল সার্টিফিকেট দিয়ে কি চাকরী হয়? তিনি জানান রামগড়ের একটি রাজনৈতিক ক্ষমতাশীন ব্যাক্তি তার সন্মান ক্ষুণ্ন করার জন্যে,মাদ্রসার কর্তৃপক্ষকে ভয়বীতি দেখিয়ে সার্টিফিকেট বিতরণ বই এবং রেজিষ্ঠার্ড থেকে তার নাম গায়েব করে পেলছে,।
রামগড় উপজেলা উলামা ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ মাও শহিদ উল্লাহ,মাও কাজী মহিব উল্লাহ ও রামগড় উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল মসজিদ পাঠাগার এর কেয়ারটেকার, মাও সাইফুল ইসলাম,জানান আবদুস সামাদ মেশকাত (উলা ) বিভাগে পড়াশোনাই করেননি,আর এখন ওনি মেশকাত (উলা)জাল সার্টিফিকেট নিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে আলেম সমাজের শুনাম নষ্ট করছে, আবদুস সামাদ, পুরান রামগড় আজিজুল উলূম মাদ্রাসার ছাত্রই ছিলেন না যা মাদ্রাসার সুত্রে আমরা জানতে পারি,মাদ্রসায় তার কোন ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি, ভুয়া সার্টিফিকেট ও তথ্য গোপন করে সে রামগড় কোর্ট মসজিদে চাকরি করে আসছেন,তার ভুয়া সার্টিফিকেটের কারণে মাদ্রাসার সু”নাম নষ্ট হচ্ছে,তাকে ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহারের দায়ে আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরী।
পুরান রামগড় ইসলামিয়া আজিজুল উলূম মাদ্রাসার মুতাওয়াল্লী মাও মোহাম্মদ করিমুল হক জানান মোঃআবদুস সামাতের সনদের বিষয়ে আমাদের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ বিভিন্ন মহল থেকে জানতে চাইলে,আমরা মাদ্রাসার ২০১৫ সনের সার্টিফিকেট বিতরণ রেজিঃ র যাচাইবাছাই করে দেখি অত্র মাদ্রাসায় তার কোন নাম নেই ;সে যদি মাদ্রাসার ছাত্রই হতো তাহলে তার নাম সর্বপ্রথম ভর্তি রেজিঃরে থাকতো।
এবিষয়ে পুরান রামগড় আজিজুল উলূম (কাজী বাড়ি) মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা মোঃ আব্দুল হক জানান, আবদুস সামাদ নামে কোন ছাত্র ২০১৫ (১৪৩৭ হিজর)সালে মেশকাত (উলা)বিভাগে ভর্তি হয়নি, আমরা মাদ্রাসার সকল রেজিঃস্টার যাচাইবাছাই করে তার কোন তথ্য খুঁজে পাইনি,যেখানে ভর্তি রেজিঃ রে ছাত্রের নাম নেই, তাহলে সে কি ভাবে অত্র মাদ্রাসার ছাত্র হয়? আবদুস সামাদ কোথায় থেকে প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়েছে তা ওনি বলতে পারেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আবদুস সামাদ নামে কোন ছাত্রকে মেশকাত (উলা) পাশের সার্টিফিকেট প্রদান করেননি । সু-নামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সনদ জালের অপরাধে সামাদকে দ্রুতই আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।
রামগড় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার ফারুক জানান সার্টিফিকেট জাল ও তথ্য গোপন করে ধর্মী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয়ে। এটা এক ধরনের প্রতারণা।
Leave a Reply