আলী জাবেদ মান্না , নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জে নিখোঁজের ৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ ফয়েজ৷ তার সঙ্গী বন্ধু প্রধান আসামী জাকির সহ অন্যান্য আসামীরা এখনো পলাতক রয়েছে৷ এঘটনায় নিখোঁজ ফয়েজের পরিবারে এক অজানা আতংক বিরাজ করছে, ফয়েজ বেঁচে আছে না কি অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করে অথবা লাশ গুম করে রেখেছে এনিয়ে ফয়েজের মা,ভাই,বোন আত্মীয় স্বজনেরা পাগল প্রায়৷ সূত্রে জানা যায় নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে মোঃ ফয়েজ আহমদ (২৩) ও বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে, জাকির হোসেন (২৫) নামের দু’বন্ধু একসাথে গত ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, রাত ৮টার দিকে বাড়ী থেকে মার্কুলি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। জাকির ফয়েজকে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যাবার কথাবলে নিয়ে যায় বলে জানান ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমন৷ এদিকে রাত ১২টার দিকে জাকির তার বন্ধু ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমনকে তার নিখোঁজের সংবাদ জানায়।পরদিন শনিবার সকালে ফয়েজের বন্ধু জাকির মোবাইল ফোনে আরো জানায় ফয়েজকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তোমরা মার্কুলি, রতনপুর, এসো আমি হাওয়রে আছি। তাৎক্ষণিক জাকিরের দেয়া তথ্যমতে সেখানে গিয়ে ফয়েজের জুতা জোড়া ও মোটরসাইকেল পাওয়া যায় এক বাড়ীতে কিন্তু ফয়েজকে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই জাকির হোসেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। ঘটনাস্থল মার্কুলি থেকে বানিয়াচং থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি ডুবা থেকে ফয়েজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করে৷ এর পরপরই ফয়েজের বন্ধু জাকির আত্মগোপনে চলে যায় ও তার সন্দেহজনক আচরণে পুলিশও জাকিরকে হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে, তবে সে ও তার সহযোগীরা এখনো গ্রেফতার হয়নি৷ এদিকে জাকিরের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ও লুকোচুরি খেলায় ফয়েজের পরিবার সন্দেহ করছেন টাকা অথবা অদৃশ্য কোনো কারণে ফয়েজকে জাকির ও তার লোকজনের সহযোগিতায় অপহরণ করে গুম হত্যা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা৷ এদিকে নবীগঞ্জ থানায় ফয়েজের ভাই কয়েছ আলী ইমন একটি জিডি করেন তাৎক্ষণিক সময়ে৷ এঘটনায় অনেক জল্পনা কল্পনা ও অজানা আতংকের একপর্যায়ে গত ২৮ অক্টোবর নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদ (২৩) এর মাতা ও জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার স্ত্রী খাদেজা বেগম বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত- কগ- ৫ এতে ফয়েজ আহমেদের সঙ্গীয় বন্ধু জাকির হোসেন (২৮), পিতা, আতাউর রহমান, সাং বাদে রায়ঘর, ৪নং দীঘলবাক ইউপি,নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ সহ বানিয়াচং থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত মজর উল্লার পুত্র সামছুল হক(৩২), দৌলতপুর ইউনিয়নের কবির পুর গ্রামের জগিন্দ্র বৈষ্ণবের পুত্র নিকেশ বৈষ্ণব (৩০), ও
নিখোঁজ ফয়েজের মুক্তিপণ দাবী করে ৪০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া দুষ্কৃতিকারী দিনাজপুর জেলার বিরল থানার আকড় গ্রামের সাইদুর রহমানের পুত্র মোঃ সুমন রানা( ৩৫) সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে গং আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি এফ,আই,আর গণ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে৷ এতে নবীগঞ্জ থানার রেকর্ডকৃত মামলা নং ১৩,তাং ২৯/১০/২০২২ ইং৷ উক্ত মামলাটি নবীগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা এস,আই গৌতম সরকার৷ ফয়েজের ভাই, কয়েছ আলী ইমন ও তার মামা সাহিদ আলী বলেন, ফয়েজ নিখোঁজের পরথেকে তাদের পরিবার/পরিজন তার মা’সহ পরিবারের সবারই আহার নিদ্রা নেই,সবাই নিখোঁজ ফয়েজের জন্য অজানা আতংকে দিনাতিপাত করছেন৷ তাই নিখোঁজ ফয়েজের বন্ধু জাকির সহ পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করলেই ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে এবং ফয়েজের সন্ধান অথবা তথ্য পাওয়া যাবে বলে দাবী করেন নিখোঁজের পরিবারের লোকজন৷
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) ডালিম আহমেদ বলেন , আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply