নওগাঁর মান্দায় চারশত বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে কুশুম্বা মসজিদ। মসজিদটি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় একটি দশনীয় স্থান, আত্রাই নদীর দক্ষিণ—পশ্চিম দিকে এবং মান্দা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দুরে, রাজশাহী—নওগাঁ মহাসড়কের পশ্চিমে মসজিদটি অবস্থিত। বরেন্দ্র জনপদের নওগাঁ জেলার বৃহত্তম উপজেলা মান্দায় অবস্থিত ঐতিহাসিক কুশুম্বা মসজিদ সুলতানী আমলের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এর মিহরাবের উপরে সুলতান আলা—উদ—দীন হোসাইন শাহ এর নাম লিপিবদ্ধ থাকায় ধারনা করা হয় তাঁর শাসনামলে মসজিদটি নির্মিত হয়।
এই মসজিদটি চতুস্কোণ বিশিষ্ট কালো ও ধুসর বর্ণের পাথর এবং পোড়া মাটির ইষ্টক দ্বারা নির্মিত। ইটের তৈরী এই মসজিদের দেওয়াল গুলো বাইরে ও ভিতরে পাথর দ্বারা আবৃত।
মসজিদটির ময়াজ্জেম মাওলানা মো: ইসরাফিল আলম বলেন, মসজিদের অভ্যন্তরে দুটি প্রসস্থ স্তম্ভ আছে। এই দুটি স্তম্ভ ও চার পাশের দেয়ালের উপর মসজিদের ৬ টি গম্বুজ আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে উত্তর—পশ্চিম কোনে স্তম্ভের উপর একটি উচু আসন রয়েছে। এই আসনে বসেই কাজী/বিচারক বিচার কার্য পরিচালনা করতেন বলে ধারনা করা হয়। প্রায় সাড়ে চারশত বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে নওগাঁর ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ। যা বর্তমানে পাঁচ টাকার নোটে মুদ্রিত। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী আসেন এই মসজিদটি দেখার জন্য ।অনেক লোক আসে নিজেদের মানত সারতে।
এখানে আশা দশনার্থীরা জানান,এই মসজিদটিতে মুসলিমের পাশাপাশি হিন্দুধর্মের লোকজন ও আসে তাদের মনবাসনা পূরণের জন্য ।
এছাড়াও মসজিদটি সংলগ্ন উত্তর—দক্ষিণ দিকে রয়েছে ৭৭ বিঘা বিশিষ্ট একটি বিশাল দিঘি। দিঘিটি লম্বায় প্রায় ১২০০ ফুট ও চওড়ায় প্রায় ৯০০ ফুট। গ্রামবাসী এবং মুসল্লিদের খাবার পানি, গোসল ও অযুর প্রয়োজন মেটানোর জন্য এই দিঘিটি খনন করা হয়েছিল। এই দিঘির পাড়েই নির্মাণ করা হয়েছে ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ।
মসজিদের সন্মুখভাগে রয়েছে খোলা প্রাঙ্গণ ও পাথর বসানো সিঁড়ি। যা দিঘিতে গিয়ে নেমেছে। মসজিদের প্রবেশ পথের একটু দূরে বাক্স আকৃতির একটা কালো পাথর দেখা যায়। এটিকে অনেকে কবর বলে মনে করেন।
মসজিদের পাশের এক দোকানদার বলেন, মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ কবে হয় তার সঠিক কোনও সাল বা তারিখ জানা যায়নি। এখানে রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের জন্য ওযু ও গোসল ঘাট। রক্ষণাবক্ষেণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো প্রাচীন এই মসজিদটি। এটিকে সংস্কারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ।এবং প্রাসনের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের জোরদার নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তাই প্রায় প্রতিদিনই হয় উপচে পড়া ভিড়। এর ফলে স্থানীয় লোকজনের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে।
Leave a Reply