বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার মিঠাপুর ইউপির নতুন পাড়া গ্রামের সিদ্দিকের স্ত্রী মিনা বেগম (৩০) কে একই গ্রামের মাওলানা আঃ রশিদের ছোট ভাই ও নতুন পাড়া জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ আলী (৫০) কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনা অনুসন্ধানে জানা যায়, ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৮ ঘটিকায় সিদ্দিকের স্ত্রী মিনা বেগম তার পরিবারিক কাজ করছিলেন। এমন সময় ওয়াহেদ আলী তার (মিনার) বাসায় গিয়ে গরুর মাংস কেনা নিয়ে গল্প করেন, তার স্বামী বাড়িতে আছে কিনা জিজ্ঞেস করেন, এবং আশেপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি উপলব্ধি করেন। গল্পের এক পর্যায়ে
মিনা বেগম নিজ কাজে শয়ন কক্ষে প্রবেশ করলে ওয়াহেদ আলী সুযোগ বুঝে তার পিছনে পিছনে গিয়ে ঝাপটে ধরে, এবং জোর জবরদস্তি করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ঘটনা টের পেয়ে মিনা বেগমের স্বামী সিদ্দিকের বড় ভাই আব্দুস সালাম মিনা বেগমের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করেন এবং ওয়াহেদ আলীকে লাঠি দিয়ে মেরে তাড়িয়ে দেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে স্থানীয় মেম্বার হারুনুর রশীদে সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি লোক মারফত ঘটনা শুনেছি, তবে এখনো পর্যন্ত আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।
স্থানীয় ভ্যানচালক মিঠুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা সত্য, শুধু এই ঘটনা নয় ইতোপূর্বে একই গ্রামের আদিবাসী মহিলা সুমিতি রাণী কেও ২০০৮ সালে তার লালসার স্বীকার হতে হয়েছে। এবং সুমিতা রাণীর ঘরে ওয়াহেদ আলীর ঔরসজাতক একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। এখন সেই ছেলের বয়স প্রায় ১৪ বছর।
গ্রাম্য মাতবর মোজাম্মেল হক জানান, ঘটনা সত্য, আজ যে কোন সময় সালিশি বৈঠকে বসে মিমাংসা করা হবে।
ধর্ষণ চেষ্টাকারী ওয়াহেদ আলীর বাড়িতে গেলে, তাকে এবং তার পরিবারের কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার মুঠোফোনে বারংবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ওয়াহেদের ছোট ভাই রূকনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রশিদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বিকার করেন। এবং বিষয়টি গ্রামের যে কমিটি রয়েছে তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ওয়াহেদ আলী ইতোপূর্বে ও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এবং গ্রাম্য সালিশে এক রকম দফা-রফার মধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। ঐ ঘটনার ফলস্বরূপ তার ঔরসজাতক সন্তান এখন পথে পথে ঘুরতেছে। আমরা এলাকাবাসি এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করতেছি।
স্থানীয়রা আরো জানান, ওয়াহেদের স্ত্রী মিঠাপুর ইউপির হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকরী শিক্ষিকা। এবং তার এক ভাতিজা পুলিশ সদস্য হিসেবে রাজশাহী তে চাকরি করেন। তাদের প্রভাব খাটিয়ে এ ধরণের ঘটনা ঘটান ওয়াহেদ আলী।
মিঠাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন এর কাছে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, তবে অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বদলগাছী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমানের কাছে মুঠোফোন ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply