ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার শাকিব উদ্দীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে ডিসিকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ‘ভাইরাল’ ভিডিওর বরাতে দেশের বিভিন্ন জাতীয় অনলাইন পত্রিকা, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও দৈনিকে ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার শাকিব উদ্দীন ঘুষের বিনিময়ে কাজ করেন মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়। নিয়মিত সংবাদ পর্যালোচনার সময় বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের নজরে আসে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন সেবাগ্রহীতা সদ্য অনুমোদিত নামজারি (খারিজ) করতে এলে রাণীশংকৈল উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার শাকিব উদ্দীন সেবাগ্রহীতাকে বলেন, নামজারিতে একটি নাম ভুল হয়েছে সংশোধন করতে হবে এবং সব মিলে ১ হাজার টাকা লাগবে, এর কম হবে না। কারণ সংশোধন করতে হলে এটি উপরে পাঠাতে হবে, সেখানে টাকা চাইবে।
একপর্যায়ে সাকিব উদ্দীন ওই ব্যক্তিকে বলেন, ‘যাও যাও, তুমি তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো, যাও।’ তখন পাশ থেকে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘একটু কম রাখেন।’ তখন সাকিব উদ্দীন তাঁকে বলেন, ‘এটা ভাই কোনো কাজকাম না। আমার কথা হচ্ছে, আমি যখন ওখানে কাজ করব, ও কিছু খাবে, আমি কিছু খাব। সোজা কথা, ঠিক আছে।’ তখন পাশের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘না, কিছু কম রাখেন।’
কিছুটা বিরতিতে আবার ওই ব্যক্তি বলেন, ‘ওই সাকিব ভাই, ৬০০ টাকা রাখেন।’ তখন সাকিব উদ্দীন বলেন, ‘কী জন্য? আমাকে তো ওখানেই দিতে হবে পাঁচ-ছয় শ টাকা। তাহলে আমার কী?’ তখন ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি এইটা রাখেন।’ এ কথা শুনে সাকিব উদ্দীন তাঁকে বলেন, ‘না, না। আমাকে ১০০ কম দেন, ৯০০ টাকা দেন। তাহলে আমি কাজ করব, না হয় করব না।’
তখন ওই ব্যক্তি বলেন, ‘শুনেন, আপনি এখন ৭০০ টাকা নেন, কাজ শেষে বাকি টাকাটা দেব।’ এই বলে সাকিবের দিকে কিছু টাকা বাড়িয়ে দেন। তখন সাকিব উদ্দীন ওই ব্যক্তিকে বলেন, ‘এখন ৭০০ দিলেন, যখন কাগজ নিয়ে যাবেন, তখন বাকিটা দিবেন?’ এই বলেই হাতে টাকাটা নিয়ে নেন। এরপর সাকিব উদ্দীন ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বরটি যাচাই করে নেন। পরে সাকিব বলেন, ‘আর এটা নিয়ে কিন্তু কোনো কথা হবে না। কেন হবে না? কারণ, তশিলদার যখন জানতে পারবে, আমার কাছে ফাইল না এনে ওরা কাজটা করে দিল, তখন কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।’
সেসময় সাকিব ফাইলে কী সংশোধন করতে হবে, তা জেনে লিখে নেন। পরে তিনি বলেন, ‘আচ্ছা যান। কাজ হলে ফোন দেব। তবে এক সপ্তাহের আগে কিন্তু হবে না।’
তার কথা শুনে সেবাগ্রহীতা ৭০০ টাকা দেন এবং বাকি টাকা কাজ হলে দেবেন বলে জানান।
পরে উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, কাজটির জন্য নাজির শাকিব উদ্দীন টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন সেটির আসলে তেমন কোনো ফি নেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ গোলাম কিবরিয়া / ই-মেইল :daliysomoyaralo24info@gamil.com --(জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো প্রিন্ট পত্রিকার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই)
দৈনিক সময়ের আলো ২৪ডট কম