মো: জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান : আম্মু জান এখনো কাঁদে আগামি বৃহস্পতিবার । ছুটি শেষ। প্রায় ৪৫ দিন ছুটি কাটিয়েছি এলাকায়। ভালোই কেটেছে দিনগুলো।আজ থেকে শুরু হয়ে গেছে আম্মুজানের উপদেশবাণী।এটা খাও,ওটা কাও,জামা কাপড় গুছিয়ে নাও।মাদ্রাসা কি কাছে নাকি?কিছু রেখে গেলে আবার আয়সা নিয়ে যাবে কি করে?এভাবে নানাবিধ আদেশ,নিষেধ শুরু হয়ছে।আর মাঝে মাঝে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।আঁখি বেয়ে টপ টপ করে অশ্রু ঝরে।নিঃশব্দে কাদে।যখন জিজ্ঞেস করি আম্মুজান কাঁদেন কেন?তখন বলে কিছুনা আব্বু।আম্মুজানের কান্না নতুন কিছু নয়।বাড়ি থেকে মাদ্রাসাই যাওয়ার সময় আম্মুজান সবসময়ই কাঁদেন।
কিন্তু একটা সময় ছিল আম্মুজান একা কাঁদতেন না। আমিও কাঁদতাম। আমার কাদা শুরু হতো আম্মুজানের ৩ দিন আগে থেকেই।খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ হয়ে যেত।আম্মুজানের কোলে ঘুমাতে যেতাম,আম্মুজানের পিছে পিছে তাকতাম সবসময়।আমি আম্মুজান কে ছাড়া যেতে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারতাম না।আমি মাদ্রাসাই যাওয়ার পরে ও প্রায় এক সাপ্তাহ মত কিছু করতে পারতাম না,পড়াশোনা থেও মন বসত না,শুধুই কান্না আর কান্না।আমি শুধু কান্না করতাম আর নফল নামাজ পরতাম।আম্মুজান বলেছিল কান্না আসলে নামাজ পড়তে।কিন্তু এখন আর এমন হয় না।এখন আর আমার কান্না পায় না।মাদ্রাসাই যাওয়ার সময় আর মন কারাপ হয় না।আর অশ্রু ঝরে না।কারণ আমি এখন বড় হয়ে গেছি।আমার চোখের পানির দাম অনেক বেশি।কিন্তু আম্মুজান বড় হলো না।ছোটই রয়ে গেল।এখনো ছোট বাচ্চাদের মত কাঁদে। আমি কাদি না।আমি বাসা আর মাদ্রাসার মধ্যে আগের মতো তফাৎ খুঁজে পাইনা। মাদ্রাসাই আমার জন্য অনেক বন্ধু অপেক্ষা করতেছে।তাই আর মন কারাপ হয় না।কিন্তু আম্মুজান?আম্মুজান কাদে কেন? আম্মুজান তু আর বাসাই কষ্টে থাকে না।তারপরে ও কেন কাদে?কারণ আম্মুজানের জন্য তু আর কেও অপেক্ষা করতপছে না।বরং আম্মুজান তু তার একমাত্র বুকের মনিককে তার কোল থেকে বিদায় দিচ্ছে।আম্মুজান মাঝে মাঝে আমাকে বলে,আমি যদি পুত্র হতাম তুই হতি আমার মা,তাহলে বাবা বুঝতে পারতি পুত্রের বেদনা”
Leave a Reply