রাজধানীর উত্তরার জসিম উদ্দিন রোডের কাছাকাছি প্রাইভেটকারের ওপর নির্মাণাধীন বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে একই পরিবারের শিশু-নারীসহ ৫ জন নিহতের ঘটনায় ক্রেন চালক ও সহকারিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
উত্তরায় এ ঘটনায় বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছে র্যাব। ক্রেনটি চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারি রাকিব। আর বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল অপারেটর আল আমিন।
বুধবার দিবাগত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১,৩,৪,৬ এবং র্যাব-১২ এর পৃথক দল ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ক্রেন চালক মো. আল আমিন হোসেন ওরফে হৃদয় (২৫), রাকিব হোসেন (২৩), ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিসের ট্রাফিক ম্যান মো. রুবেল (২৮), মো. আফরোজ মিয়া (৫০), মো. জুলফিকার আলী শাহ (৩৯), হেভি ইকুইপমেন্ট সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত ইফসকন বাংলাদেশ লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী মো. ইফতেখার হোসেন (৩৯), হেড অব অপারেশন মো. আজহারুল ইসলাম মিঠু (৪৫), ক্রেন সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেড কোম্পানীর মার্কেটিং ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন ওরফে তুষার (৪২), প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা (৩৩) ও মো. মঞ্জুরুল ইসলাম (২৯)।
র্যাব জানায়, উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের যে ক্রেন থেকে প্রইভেটকারের ওপর গার্ডার পড়েছে সেটির সক্ষমতা ছিল ৪৫-৫০ টন। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ক্রেনে যে গার্ডারটি তুলছিল সেটির ওজন ছিল ৬০-৭০ টন।
আজ বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের উধর্বতন কর্মকর্তা, র্যাব সদরদপ্তরের কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মকর্তাগন এসময় উপসিস্থত ছিলেন।
খন্দকার আল মঈন জানান, গত সোমবার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নং সেক্টর ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের জসীমউদ্দিন রোড সংলগ্ন প্যারাডাইজ সেন্টারের সামনে বিকাল আনুমানিক সোয়া ৪ টার দিকে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপরে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের দুই শিশু ও নারীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও ২ জন গুরুতর আহত হন।
পরবর্তীতে এ দুর্ঘটনায় ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ক্রেনের মূল অপারেটর মো. আল আমিন। তার হালকা গাড়ী চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারী গাড়ী চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ২ থেকে ৩টি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার পর ২০২২ সালের মে মাসে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ শুরু করে।
Leave a Reply