কৃষক যখন সারের জন্য দীর্ঘ লাইনের অপেক্ষা করছেন ঠিক তখনি কৃষি কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান বাব্যসায়ীদের কাছে সার বিক্রয়ে ব্যস্ত বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজে ডিলার হওয়ায় কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে কৃষকের বরাদ্দকৃত সার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ অধিকাংশ কৃষকের।
এদিকে সার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য কৃষকরাও। তবে সংশ্লিস্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম মুস্তাক ও কৃষি কর্মকর্তা নিগারিন সুলতানা কৃষক হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করেন।
গতকাল বুধবার (০২ নভেম্বর) ওই ইউনিয়ন পরিষদে কৃষি বিভাগের তত্ববধানে ডিলারের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কৃষকদের রাসায়নিক সব ধরনের সার দেয়ার কথা থাকলেও সার নিতে এসে হয়রানী ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রির অভিযোগ তুলেন প্রান্তিক কৃষকরা।
তবে সার সংকটের অভিযোগের বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালকে জানানো হলে তিনি বরাবরের মতোই জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণের সার রয়েছে বলে জানান।
অন্যদিকে, সারের জন্য কৃষক হাহাকার করছেন। সার না পেয়ে খালি হাতেই ঘুরে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদ গুলোতে প্রায় সময় সারের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কৃষকদের। এমন অবস্থায় সার না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা।
এদিকে সময় মতো সার না পাওয়া নানা রকম ফসল উৎপাদন নিয়ে হতাশ ও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন কৃষকরা। সদরের কয়েকজন চাষী জানায়, সারের অভাবে আমনের আবাদ তেমন একটা ভালো হয়নি। এখন আলুর সময়। ধানের চেয়ে আলুতে বেশি সার লাগে। বিশেষ করে পটাশ, ইউরিয়া ও টিএসপি। কিন্তু পটাশ ও টিএসপি সার তো দুরের কথা কোন সারই বর্তমানে পাওয়া যায় না বাজারে। এভাবে সার না পেলে চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কার কাছে অভিযোগ করব? চেয়ারম্যান যখন কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে ব্যবসায়ীদের কাছে সার বিক্রি করে। আর কৃষি বিভাগ তো আমাদের কথা কানেই নেন না। তিনি শুধু বলেন সার আছে সার আছে। বাস্তবে আমরা তো সার পাচ্ছি না। তাহলে কৃষি বিভাগের সেই পর্যাপ্ত পরিমাণের সার যাচ্ছে কথায় কে খাচ্ছে?
অভিযোগ প্রসঙ্গে সদরের জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমায়ান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কারো কাছে সার বিক্রি করা হয়নি। পর্যাপ্ত সার রয়েছে। আর ওই ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিগারিন সুলতানা কৃষক হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন প্রত্যেক কৃষক সার পাচ্ছেন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। প্রতিমাসের সার প্রতিমাসে দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা আগাম সার কিনছে বলে সংকট দেখা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড. আব্দুল আজিজ জানান, সবজি ও আলু চাষের জন্যেও পর্যাপ্ত পরিমাণে সার মজুদ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক সারের বাজার মনিটরিং করছেন। আর সার বিতরণের সময় প্রশাসনের লোকজন থাকেন। তাই সারের কোন অনিয়ম হচ্ছে না বলে তিনি জানান। তবে চেয়ারম্যান ও কৃষি কর্মকর্তার সার বিক্রির অভিযোগটি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply